হঠাৎ দেখা
বেশ কিছুদিন ধরে ঘরের বাইরে বের হতে পারছিনা। জুরুরী প্রয়োজন ছাড়া বাইরেও বের হতে নিষেধ আছে প্রশাসনের। তাই অলিখিত কারাবন্দি জীবন পার করছি। এছাড়াও নিজের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে আমরাও কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছিনা। কারণ বিশ্বজুড়ে করোনা ভাইরাস নামক অদৃশ্য একটি শক্তি মানুষের মাঝে ত্রাস হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিন্তু ঔষধের জন্য আমাকে বাইরে বের হতেই হলো। হাতে ডাক্তারের দেওয়া প্রেসক্রিপশন নিয়েই বের হলাম যদি রাস্তায় প্রশাসনের কেউ ধরে তাহলে তা দেখিয়ে এগিয়ে যেতে পারবো। মনে করেছিলাম আশে পাশের দোকান গুলো থেকেই তা পেয়ে যাবো। কিন্তু খোঁজতে খোঁজতে শহরে চলে গেলাম। সেখানে গিয়ে কয়েকটি দোকান খোঁজে পেয়েও গেলাম।
রিক্সার জন্য দাঁড়িয়ে আছি এমন সময় হঠাৎ ঠান্ডা শীতল হাতের স্পর্শ অনুভব করলাম। আমি অবাক নয়নে তাকিয়ে দেখলাম কেউ আমাকে ধরে আছে। আমি দেখলাম তার দু'চোখের কোণায় দু'ফোটা অশ্রু জমে আছে। হয়তো যে কোন সময় সেখান থেকে ঝর্ণা ধারার মতো জল গড়িয়ে পড়বে। কিছু বলবো কিন্তু ভাষা খোঁজে পাচ্ছিলাম না। আমার কিছু বুঝে উঠার আগেই সে আমাকে জড়িয়ে ধরলো। তার চোখের জলে আমার সাড়া শরীর ভীজে একাকার হয়ে গেলো। কান্না একটু থেমে যাওয়ার পর তার নাম পরিচয় জিজ্ঞেস করতেই সে আবার কান্না শুরু করে দিলো।
-কান্না জড়িত কন্ঠে সে বলতে শুরু করলো, আমি তোমাকে অনেক খোঁজেছি কিন্তু কোথাও খোঁজে পাচ্ছিলাম না। আমি অনেককে জিজ্ঞেস করেছি তুমি কোথায় থাকো? কেউ বলেছে তুমি সেখানে আছো, ওখানে আছো, আবার কেউ বলেছে তুমি কয়েক বছর ধরে এই শহরে আছো। তারপর তোমার খোঁজে প্রায় এক সপ্তাহ আগে এখানে এসেছি। কিন্তু তোমার ফোন নাম্বার, ঠিকানা কোন কিছুই আমার কাছে ছিলো না। তবে আমার বিশ্বাস ছিলো তুমি কোন কাজের জন্যে একবার হলেও এখানে আসবে। আজ আমার বিশ্বাস সত্যি হলো। আমি তোমাকে দেখতে পেলাম।
কথা শেষ করে আমি তাকে বিদায় জানাতে চাইলাম। কিন্তু সে আবার কেঁদে ফেললো।
-কি করবো বুঝতে পারছিলাম না। তারপর সে নিজেই বললো, এই সময়ে আমি তোমাকে বিপদে ফেলতে চাইনা, আমার একটাই অনুরোধ আমি তোমার বাসার গেট পর্যন্ত যেতে চাই। আমাকে না করোনা প্লীজ!! তার ইচ্ছেটাকে পূরণ করার জন্য বাসার গেট পর্যন্ত তাকে নিয়ে আসলাম। শেষে আমিই তাকে অনুরোধ করলাম ভিতরে আসতে। কিন্তু সে ভিতরে আসতে চাইলো না। অবশেষে তাকে বাসার গেট থেকে তাকে বিদায় বলতেই হলো।
কারন..........!!!!
0 Post a Comment:
Post a Comment