ছেলে আমার বড় হবে
মাকে বলতো সে কথা
মানুষের মতো মানুষ এক লেখা ইতিহাসের পাতায়
নিজ
হাতে খেতে পারতাম না
বাবা
বলতো ও খোকা যখন আমি থাকবোনা
কি
করবি রে বোকা……………
জেমসের
গাওয়া এই গানটি শোনলে অজান্তেই চোখের কোণে দুফোটা জল চলে আসে। বাবা শব্দটা শোনলেই একটি
আদর মাখা শাসনের কথা মনে পড়ে যায়। নিজ সন্তানকে মানুষের মতো মানুষ করার জন্য
প্রতিটা বাবাই নিজের তাজা রক্ত পানি করে অবিরত পরিশ্রম করে থাকে। বাবা সব সময়
ছাতার মতো সকল সন্তানকে আগলে রাখেন যেন সন্তানের কোন ক্ষতি না হয়। সন্তান বড় হলেও
বাবারা সন্তানদের ছোটই মনে করে। তাই বিপদে আপদে সব সময় পাশে থাকেন। বাবার অভাব অপূরণীয়।
যার বাবা নেই একমাত্র সেই বুঝে বাবা আসলে কি। আর তাই বাবার প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা
জানানোর জন্য প্রতি বছর জুন মাসের তৃতীয় রবিবার “বাবা দিবস” পালন করা হয়।
আর আমি ব্যক্তিগত ভাবে যখন দুই সন্তানের জনক হলাম (১. ইথান বিলরাক (বড় ছেলে) ২. ইভান রাসং( ছোট ছেলে) তখন বুঝতে পারলাম বাবা হওয়া এতো সহজ নয়। বাবার দায়িত্ব ও কর্তব্য অনেক। আমি এখন চিন্তা করলে বুঝতে পারি আমার বাবা আমাদের জন্য কত কষ্ট সহ্য করেছেন। দিন মজুর বাবা ছয় সন্তানকে কিভাবে এতো সুন্দর করে লালন পালন করেছেন তা যদি কল্পনা করি তখন চোখে জল চলে আসে। শুধু বাবা দিবসে নয় প্রতিনিয়ত বাবার খেয়াল রাখা উচিত। বয়স হয়ে গেলে এবং যখন তাদের কর্মক্ষমতা কমে যায় তখন আরো বেশি খেয়াল রাখা উচিত। আমরা যখন পড়াশুনা করতাম তখন বাবা আমাদের হাত খরচের টাকা দিতো। এখন বাবার ইনকাম নেই; এখন আমাদের উচিত বাবাকে হাত খরচের টাকা দেওয়া।
এনসাইক্লোপেডিয়া মতে, বিশ্বের অনেক দেশে
শ্রদ্ধাভরে বাবা দিবস পালন করে থাকে। বাবার প্রতি সন্তানের চিরন্তন ভালোবাসার প্রকাশ প্রতিদিনই ঘটে। তার পরও পৃথিবীর মানুষ বছরের একটা দিনকে বাবার জন্য রেখে দিতে চায়। যেমনটা মায়ের জন্য করেছে।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাবা দিবসের প্রচলন।
ইংরেজিতে ফাদার বা ড্যাড, জার্মানিতে ফ্যাটা, বাংলায় বাবা, ভারতীয়দের ভাষায় পিতাজি- যে নামেই ডাকুন না কেন পিতার প্রতি সন্তানের ভালবাসা একই প্রকাশ পায়।
বাবা দিবস পালন শুরু হয় বিংশ শতাব্দীর প্রথমদিক থেকে । পৃথিবীর সকল
বাবাদের স্মরণ, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে এই দিবসটি উদযাপ করা হয়।
ধারণ করা
হয়, ১৯০৮ সালের ৫ জুলাই, আমেরিকার পশ্চিম ভার্জিনিয়ার ফেয়ারমন্টের (Fairmont, West Virginia) এক গির্জায় এই দিনটি প্রথম পালিত হয়। আবার সনোরা স্মার্ট ডড
নামের ওয়াশিংটনের এক ভদ্র মহিলার মাথাতেও বাবা দিবসের আইডিয়া আসে। যদিও তিনি ভার্জিনিয়ার
ফেয়ারমন্টের কথা একেবারেই জানতেন না। ডড এই আইডিয়াটা পান গির্জার এক পুরোহিতের
বক্তব্য থেকে, সেই পুরোহিত আবার মাকে নিয়ে অনেক কথা বলছিলেন। ডড তার বাবাকে অনেক
ভালোবাসতেন। সেই ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা থেকে তিনি সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোগে পরের বছর অর্থাৎ
১৯ জুন, ১৯১০ সাল থেকে বাবা দিবস পালন করতে শুরু করেন। তারপর ধীরে ধীরে মানুষ এই
দিবসকে পালন করতে থাকে।
আমরা যেন এই দিনে নিজেরদের বাবাকে বলতে পারি বাবা তোমাকে খুব ভালোবাসি।