|
আহসান মঞ্জিল |
ছুটিতে কোথায় ঘুরতে যাবো এই নিয়ে ঢাকায় অবস্থানরত অনেকেই চিন্তায় থাকে । সাপ্তাহিক ছুটিতে ঢাকায় ঘরে বেড়ানোর মতো অনেক দর্শনীয় স্থান আছে যেখানে আপনি আপনার পরিবার ও বন্ধ বান্ধব নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন। তার মধ্যে পুরান ঢাকার ঐতিহাসিক আহসান মঞ্জিল অন্যতম। আমার বিশ্বাস এখানে আপনি অনেক কিছু দেখে তৃপ্তি ভরে বাসায় ফিরতে পারবেন। আহসান মঞ্জিল দেখা শেষ করে সদরঘাটের লঞ্চঘাট দেখে যেতে ভুলবেন না।
আহসান মঞ্জিল নবাবদের আবাসিক প্রাসাদ ও জমিদারীর সদর কাচারি। পুরান ঢাকার ইসলামপুরের কুমারটুলী
এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত। আহসান মঞ্জিল এর প্রতিষ্ঠাতা নওয়াব আব্দুল
গনি। তিনি তার পুত্র খাজা আহসানুল্লাহর নামানুসারে এর নামকরণ করেন। আহসান
মঞ্জিলের নির্মাণকাল ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে থেকে
১৮৭২ খ্রিস্টাব্দ। বর্তমানে এটি জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এই জাদুঘরটি বাংলাদেশ
জাতীয় জাদুঘর কর্তৃক পরিচালিত জাদুঘর।
মুঘল আমলে এখানে
জামালপুর পরগণার জমিদার শেখ এনায়েতউল্লাহর রঙমহল ছিল এই স্থানটি। তার পুত্র মতিউল্লাহ’র
নিকট তেকে রঙমহলটি ফরাসিরা ক্রয় করে এখানে বাণিজ্য কুঠি স্থাপন করে। ১৮৩০ সালে
খাজা আলীমুল্লাহ ফরাসিদের নিকট থেকে ক্রয় করে নিজের বাসভবনে পরিণত করেন। এ
বাসবভনকে কেন্দ্র করে খাজা আব্দুল ঘণি মার্টিন অ্যান্ড কোম্পানী নামকিএকটি ইউরোপীয়
নির্মাণ ও প্রকৌশলী প্রতিষ্ঠানকে দিয়ে একটি মাস্টার প্ল্যান তৈরী করান যার প্রধান ইমারত
ছিল আহসান মঞ্জিল।
এক মিটার উঁচু বেদীর উপর
স্থাপিত দ্বিতল প্রাসাদটি। এই প্রাসাদটির ৩১টি কক্ষের মধ্যে ২৩টি কক্ষ বিভিন্ন প্রদর্শনীর
জন্য উন্মুক্ত রয়েছে। জাদুঘরে সংগৃহীত নিদর্শন সংখ্যা মোট ৪ হাজার ৭৭টি। জাদুঘরে
রয়েছে নওয়াব আমলের ডাইনিং রুম, ড্রয়িং রুম, নওয়াবদের ব্যবহৃত বড় বড় আয়না, আলমারি,
সিন্দুক, কাচ ও চিনামাটির থালাবাসন, নওয়াবদের হাতির মাথার কঙ্কাল গজদন্ত, নওয়াবদের
ব্যবহৃত অলংকার, রুপা ও ক্রিস্টালের তৈরী চেয়ার-টেবিল, তৈলচিত্র, নাচঘর, সোনা ও
রুপার তারজালিকাজ আহসান মঞ্জিলের নকশা।
আহসান মঞ্জিল জাদুঘরে তোষাখানা ও ক্রোকারিজ কক্ষে থাকা তৈজসপত্র এবং নওয়াব এস্টেটের
পুরনো অফিস এডওয়ার্ড হাইস থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন নিদর্শন সংরক্ষণ করে প্রদর্শন করা
হয়েছে।
কিভাবে যাবেন ঃ
ফার্মগেট থেকে গুলিস্তান আসার মতো অনেক বাস পাবেন। আবার যারা উত্তরা সাইট থেকে আসবেন তারাও গুলিস্তান পর্যন্ত আসে এরকম বেশ কয়েকটি বাস পেয়ে যাবেন। গুলিস্তানে নামার পর সরাসরি এখান থেকে রিক্সা করে আহসান মঞ্জিল যাওয়া যায়। ভাড়া দর দাম করে নিলে ৬০-৭০ টাকা নিবে। অথবা গুলিস্তান থেকে বাসে করে বাংলাবাজার আসতে পারেন। বাংলাবাজার থেকে রিক্সা করে আহসান মঞ্জিল যাওয়া খুব সহজ। ভাড়া ২০-৩০ টাকা নিবে।
আহসান মঞ্জিল দর্শনার্থীদের জন্য খোলার সময় সূচি
গ্রীষ্মকাল সকাল ১০:৩০মি.
থেকে ৫:৩০ মি. পর্যন্ত
শীতকাল সকাল ০৯:৩০মি. থেকে
৪:৩০ মি. পর্যন্ত
শুক্রবার বিকাল ৩টা থেকে
রাত ৮টা পর্যন্ত
বৃহস্পতিবার সপ্তাহিক ছুটি
|
আহসান মঞ্জিল |
|
আহসান মঞ্জিল |