Biloy Mrong

Biloy Mrong

Friday, February 1, 2019

চন্দ্রনাথ মন্দির ও পাহাড়, সীতাকুন্ড/Chandranath Temple

চন্দ্রনাথ মন্দির ও পাহাড়, সীতাকুন্ড, চট্টগ্রাম 

The Way To Chandranath Temple

সূর্য, চন্দ্র, গ্রহ ও তারা যখন খোঁজা হয় তখন আমাদের ওই দূর আকাশে তাকিয়ে দেখতে হয়। তেমনি প্রকৃতির সৌন্দর্য্য পাহাড়, ঝর্ণা, সমুদ্র দেখতে হলে আমাদের সীতাকুন্ড ভ্রমণষ করা উচিত। প্রকৃতির সৌন্দর্যের লীলাভূমি এখানে আসলেই খোঁজে পাওয়া যাবে। শুধু সৌন্দর্য্য খোঁজে বেড়ানো নয় কর্ম ব্যস্ততার মাঝে নিজের জন্য একটু সময় বের করে প্রকৃতির সাথে কিছু সময় অতিবাহিত করা। আমি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি ইট পাথরের শহর থেকে বেরিয়ে যখন এখানে একবার ঘুরতে আসবেন তখন মন ও শরীর এক অন্য রকম অনুভূতিতে ভরে যাবে।




ভ্রমণ পরিকল্পনাঃ

যে কোন কাজ করতে গেলে সবার আগে যে কাজটি করতে হয় তা হলো সুন্দর একটি পরিকল্পনা । যদি আপনার পরিকল্পনা ভালো হয় তাহলে আপনার সব কিছুই ভালো ভাবে শেষ হবে। তাই ভ্রমণের আগে আপনাকেও ভালো একটি পরিকল্পনা করতে হবে। কখন যাবেন, কোথায় থাকবেন, কিভাবে যাবেন, কিসে যাবেন এবং ভ্রমণে কে কে যাচ্ছেন সব কিছু মাথায় রেখে ভ্রমণ পরিকল্পনা করতে হবে। ছোট দলে যাবেন নাকি বড় দল নিয়ে যাবেন সেভাবেই ভেবে চিন্তে ভ্রমণ পরিকল্পনা করা ভালো। আজ আমার নিজের সীতাকুন্ডের চন্দ্রনাথ ভ্রমণের অভিজ্ঞতানুযায়ী কিছু কথা আপনাদের সাথে সহভাগিতা করবো। আশা করি ভবিষ্যত ভ্রমণে আপনাদের কাজে আসবে। 




সীতাকুন্ডের চন্দ্রনাথ মন্দির ও পাহাড়ঃ

সীতাকুন্ডের নাম শুনলেই রামায়ণের রাম, লক্ষণ ও সীতার কথা মনে পড়ে যাবে। এসব ইতিহাসের কথা আমরা অনেক শুনেছি। সাধারণত সীতাকুন্ড পাহাড়টি হিন্দু ধর্মালম্বীদের অন্যতম পবিত্র তীর্তস্থান নামে খ্যাত। আজ আমি আপনাদের পাহাড়ে নিয়ে যাবো। যাকে বলা হয় সীতাকুন্ডের চন্দ্রনাথ পাহাড়। ইতিহাস বলে, এই পাহাড়াটি হিমালয়ের দক্ষিন পূর্ব দিক ঘুরে ভারতের আসাম এবং ত্রিপুর রাজ্যের মধ্য দিয়ে ফেনী নদী পার হয়ে চট্টগ্রামের সঙ্গে মিশেছে। এই পাহাড়ের পাদদেশে নির্মিত হয়েছে সীতাকুন্ড ইকোপার্ক। সীতাকুন্ড শহরের পূর্বে অবস্থিত চন্দনাথ পাহাড়টি উচ্চতা প্রায় ১০২০ ফুট। এটা চট্টগ্রাম জেলার সর্বোচ্চ উচু পাহাড়। এখানে রয়েছে সহস্রধারা ও সুপ্তধারা নামে দুটি ঝর্ণা। মিরসরাই অংশে অবস্থিত অপরুপ সৌন্দর্য্যের রানী খৈয়াছড়া ঝর্ণা দেখলে আপনার মন ভরে যাবে। যদিও সেখানে পৌঁছাতে আপনাকে পায়ে হেটে অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হবে। কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর পর কষ্ট করে পায়ে হেটে এসেছেন তা ভুলেই যাবেন। সেখানে না গেলে প্রকৃতির সৌন্দর্য্যকে ভাষায় প্রকাশ করা অনেকটাই কঠিন। তাই ঘুরে আসুন এবং উপভোগ করুন প্রকৃতি কত সুন্দর। 




চন্দ্রনাথ পাহাড় সীতাকুন্ডের বাজার থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। আপনি যেদিক থেকেই আসেন (ঢাকা অথবা চট্টগ্রাম) আপনাকে সীতাকুন্ড বাজারে নামতে হবে। তারপর বাজার থেকে পায়ে হেঁটে বা অটো সিএনজিতে করে চন্দ্রনাথ পাহাড়েরর নিচের গেট পর্যন্ত যেতে পারবেন। যাওয়ার সময় সেখানকার হিন্দু ধর্মালম্বীদের বেশ কিছু স্থাপনা চোখে পড়বে। এই পাহাড়ের পাদদেশে বেশ কিছু ত্রিপুরা আদিবাসি জনগোষ্ঠী বাস করে। আপনি সময় করে পাহাড়ের গভীরে যান তাহলে আদিবাসীদের জুম ক্ষেত দেখতে পাবেন। তবে একা একা অপরিচিত এলাকায় না যাওয়ায় ভালো। সেখানে বেশ কিছু গাইড পাবেন, আপনি চাইলে তাদের সাথে কথা বলে গাইড হিসেবে নিতে পারবেন। চন্দ্রনাত পাহাড়ে উঠার সময় আপনি ছোট্ট একটি ঝর্ণা দেখতে পাবেন। তবে এই ঝর্ণায় তেমন পানি নেই। এই ঝর্ণার ডান এবং বাম দিকে দুটি রাস্তা পাবেন। উপরে উঠার সময় বাম দিকের রাস্তা দিয়ে উঠলে ভালো, তাহলে কষ্ট কম হবে। পাহাড়ে উঠার আগে সম্ভব হলে একটি বাঁশের লাঠি কিনে  কিনে নিবেন। লাঠির মূল্য ১০ টাকা। চন্দ্রনাথ মন্দির পর্যন্ত পৌঁছাতে সময় লাগবে ১:৩০ মিনিট থেকে দুই ঘন্টা। তবে এর কম বেশিও লাগতে পারে। 



করণীয় ও সাবধানতাঃ

১. বর্ষাকালে রাস্তা পিচ্ছিল থাকে তাই সাবধানে উপরে উঠতে হবে।

২. লাঠি সাথে রাখবেন।

৩. পরিবেশ নষ্ট করে প্লাস্টিক জাতীয় কোন কিছু পাহাড়ে না ফেলা।

৪. শুকনা খাবার সাথে রাখবেন।

৫. যথেষ্ট পরিমানে পানি সাথে রাখবেন।

এখন অবশ্য উপরেও ফেরি করা দোকানে পানি ও শুকনা খাবার পাওয়া যায়। তবে দাম একটু বেশি দিতে হবে।




কিভাবে যাবেনঃ

চন্দ্রনাথ মন্দির/পাহাড় চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুন্ড উপজেলায় অবস্থিত। তাই আপনি যেখান থেকেই আসেন সীতাকুন্ড বাজারে নামতে হবে। যারা ঢাকা থেকে আসতে চান তারা চট্টগ্রাম গামী বাসে করে আসতে পারেন। বাসের সুপারভাইজারকে বলে রাখলে আপনাকে সীতাকুন্ড বাজারে নামিয়ে দিয়ে যাবেন। আর যারা চট্টগ্রাম বাজার থেকে আসবেন তারা এ,কে খান বা অলংকার মোড় থেকে টেম্পু বা মেক্সি জাতীয় পরিবহণ দিয়ে চলে আসতে পারেন। চট্টগ্রাম থেকে জন প্রতি ৩০-৫০ টাকা নিবে (বর্তমান)। আর ঢাকা থেকে আসলে চট্টগ্রামের ভাড়া রাখবে। সীতাকুন্ড বাজারে নেমে কাউকে জিজ্ঞেস করলেই বলে দিবে কিভাবে যেতে হয় চন্দ্রনাথ মন্দিরে । 




কোথায় খাবেনঃ সৌদিয়া হোটেল/রেস্তোরা, আপন, আল-আমিন নামের বেশ কিছু রেস্তোরা থাকলেও আমরা আল-আমিন রেস্তোরার খাবারের মান ও তাদের পরিবেশ ও পরিবেশনার মান ভালো পেয়েছি। আমাদের জন প্রতি খরচ পড়েছিলো মাত্র ২২০ টাকা।

 

আপনার/আপনাদের শুভ যাত্রা কামনা করছি। 









0 Post a Comment: